মেয়ে, তুমি কি দুঃখ চেনো
Amra-Nari Admin
2025-01-16

“মেয়ে, তুমি কি দুঃখ চেনো?”
– না, চিনি না।
জন্মের পর থেকে এখন অব্দি বিলাস করার মতো দুঃখ আমার নেই! প্রথম যেদিন বুঝলাম ঠিক তোমার মতো করে বড় আমি হচ্ছি না, ঠিক তোমার মতো স্বাধীন পাখনা আমার নেই, ঠিক তোমার মতো করে উদযাপিত হচ্ছে না আমার জীবনের প্রতিটি বাঁক, সেদিন বুঝেছি আমার কোন দুঃখ নেই। অথবা দুঃখের ঝাঁপি খুলে থিতু হবার মতো অভিলাস আমার নেই!
তবুও তুমি জানতে চাও আমি দুঃখ চিনি কিনা!
না, চিনি না!
বাড়ন্ত বৃক্ষকে বিশেষ শাসনে কি বানানো হয় জানো?- বনসাই। সুন্দর, পরিপাটি, নান্দনিক বনসাই। অপরিসীম পরিচর্যায় সবচেয়ে সুন্দর জায়গায় বনসাই জীবন যাপন করে। বাইরে খোলা হাওয়ায় নিলেই মৃত্যু হয় তার। আমাদের জীবনটাও সেই বনসাই। সৌন্দর্য আর পরিচর্যায় কতো সুখী সুখী দেখায় আমাদের। আমরা ফরমের পুতুল, এমন জীবন ব্যবস্থা সাজানো আছে যে এর বাইরে গেলেই ছেঁটে ফেলা হয় ডালপালা!
না, তারপরও আমি কিন্তু দুঃখীদের নই!
– “মেয়ে, তুমি দুঃখ চেনো? চেনো না!তবে চিনবে কেমন করে এই আমাকে?”
– হুম তাই তো! তোমাকে চিনতে হলে আমার দুঃখ চিনতে হবে। দুঃখ, নানা বর্ণের দুঃখ।
কখনো দেখেছো হঠাৎ চেনা জগত উলোটপালোট হতে? দেখেছো অমানবিক অত্যাচারে মরে যেতে কোন তাজা প্রাণ? ধর্ষণে পঁচে যেতে দেখেছো আত্মা নামক অণির্বান কে? গলার ক্ষত ঢাকতে দেখেছো অপমানের ওড়না দিয়ে? প্রেমিকের চোখে লালসা, মিথ্যে অঙ্গীকার, বৈবাহিক জমিদার প্রথা, সন্তান প্রসবের যাতনা কেমন- জানো? অথবা তীলে তীলে নিভে যাওয়া কবিতার আগরবাতি?
না, চিনি না আমি কোন দুঃখ! তোমাকে চিনবার তাগিদও তাই নেই। প্রতিদিনের এই সুখ, এই বনসাই জীবন আমাকে কোন বটবৃক্ষ চিনতে উৎসাহিত করে না।
আমি কোন দুঃখ চিনি না!
চিনি না তোমাকেও!